টমেটো গাছের নাবি ধ্বসা রোগ

টমেটো গাছের নাবি ধ্বসা রোগ একটি মারাত্মক ভাইরাস জনিত রোগ যার সঠিক আগাম ব্যবস্থা নিতে না পারলে বড় ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। তাই আসুন জেনে নেই আমাদের করনীয় কি…..

লক্ষণ সমূহ

১. প্রাথমিক অবস্থায় পাতার কিনারায় ও উপরে বাদমি-সবুজ ক্ষত দেখা যায়। ধীরে ধীরে পুরো পাতা বাদামি হয়ে যায়।

২. আর্দ্র আবহাওয়ায় এসব দাগ সংখ্যায় ও আকারে দ্রত বাড়তে থাকে এবং বাদামি থেকে কালচে রঙ ধারণ করে।

৩. মাঝে মাঝে পাতার নিচের দিকে সাদা সাদা ছত্রাক জন্মে।

৪. আক্রান্ত পাতা পচে যায়।

৫. পাতা হতে কাণ্ডের এবং কাণ্ড হতে ফলে রোগ ছড়িয়ে পড়ে।

৬. প্রথমে ফলের উপরিভাগে ধূসর সবুজ, পানি ভেজা দাগের আবির্ভাব হয়। ক্রমশ সে দাগ বেড়ে ফলের প্রায় অর্ধাংশ জুড়ে ফেলে এবং আক্রান্ত অংশ বাদামি হয়ে যায়।

৭. রোগের লক্ষণ দেখার পর নিম্ন তাপমাত্রা, আর্দ্র ও কুয়াশাচ্ছন্ন স্যাঁতস্যঁতে আবহাওয়া বিরাজ করলে ৩-৪ দিনের মধ্যে গাছ ঝলসে যায় ও দ্রুত মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়ে।

রোগের বিস্তার

ফাইটপথোরা ইনফেস্ট্যান্স (Phytophthora infestans) নামক ছত্রাকের আক্রমণে হয়ে থাকে। নিম্ন তাপমাত্রা (১২-১৫০ সেলসিয়াস), উচ্চ আর্দ্রতা (৯৬% এর ওপরে) ও মেঘাচ্ছন্ন স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া এবং গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি হলে রোগের প্রকোপ বেড়ে যায়। বাতাস ও সেচের মাধ্যমে এ রোগ দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

প্রতিষেধক

এই ভাইরাসের কোন প্রতিষেধক নেই। এই ভাইরাসে আক্রন্ত গাছ যত তারাতারি সম্ভব তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে।

প্রতিরোধ

রোগমুক্ত এলাকা হতে সুস্থ বীজ সংগ্রহ করতে হবে; আলু ও টমেটো গাছ পাশাপাশি লাগান উচিত নয় এবং আলু ও টমেটো ছাড়া জমিতে শস্য পর্যায় অবলম্বন করতে হবে; রোগ প্রতিরোধী জাত চাষ করতে হবে; নিম্ন তাপমাত্রা, উচ্চ আর্দ্রতা ও কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া মাত্র মেলোডি ডিও প্রতি লিটার  পানিতে ২ গ্রাম ও সিকিউর প্রতি লিটার পানিতে ১ গ্রাম হারে একত্রে মিশিয়ে গাছের পাতার ওপরে ও নিচে ভিজিয়ে ৭ দিন পর পর কমপক্ষে ৩ বার স্প্রে করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *