টবে এলোভেরা চাষ ও পরিচর্যা পদ্ধতি


.
টবে এলোভেরা চাষ করতে হলে আপনাকে সঠিক চাষ ও পরিচর্যা সম্পর্কে জানতে হবে।
.
এলোভেরা চাষে কি ধরনের মাটি নির্বাচন করা উচিৎ?
.
প্রায় সব ধরনের মাটিতেই এলোভেরা চাষ করা যায়। তবে বেলে দোআঁশ মাটিতে এলোভেরার চাষ সব থেকে ভালো হয়ে থাকে। তাই টবে চাষ করার ক্ষেত্রে বেলে দোআঁশ মাটি নির্বাচন করাই সব থেকে ভালো হবে।
.
এলোভেরা চাষে কেমন টব বা পাত্র নির্বাচন করবো?
.
বাসা বাড়ির বারান্দা বা ছাদে এলোভেরা চাষ করতে হলে মাঝারি আকারের টব বা ড্রাম নির্বাচন করতে হবে। এখন বাজারে প্লাস্টিকের টব পাওয়া যায়। এই ধরনের টব ব্যবহার করাই উত্তম হবে।
.
এলোভেরার জাত নির্বাচন
.
সারা বিশ্বে প্রায় ২৫০ প্রজাতির এলোভেরা পাওয়া গেলেও আমাদের দেশে মাত্র ২টি প্রজাতির চাষ করা হয়ে থাকে। এগুলো দেখতে অনেকটা ফনীমনসার মতন।
.
এলোভেরা চারা কোথায় পাবো?
.
এলোভেরা বেশ পরিচিত উদ্ভিদ। আপনার আশেপাশের যেকোন নার্সারিতেই পেয়ে যাবেন এলোভেরা গাছ।
.
এলোভেরা চারার দাম কত?
.
একটি ভালো এলোভেরার চারা ২৫-৫০টাকা হতে পারে। তবে স্থান ভেদে এটা ৮০-১০০ টাকাও নিতে পারে।
.
এলোভেরার চারা রোপনের সময়
.
সারা বছর এলোভেরার চারা রোপন করা যায়। তবে ভালো ফলন পেতে আষাঢ় মাসের শুরুতে রোপন করাই ভালো। তবে খেয়াল রাখবেন শীত ও বর্ষাকালে চারা না লাগানো ভালো।
.
এলোভেরার বংশ বিস্তার
.
এলোভেরা সাধারনত শেকড়ের মাধ্যমে বংশ বিস্তার করে থাকে। এর শেকড় থেকে বেরোনো ডাল সংগ্রহ করে অন্যত্র রোপন করলে গাছ হয়। চারা রোপনের পরে সঠিক নিয়মে পানি দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে পানি যেন বেশি হয়ে না যায়। আবার গোড়ায় পানিও যেন জমে না থাকে। তাহলে এলোভেরার গোড়া পচে যেতে পারে।
.
এলোভেরা চাষ নিয়ে কিছু কথা
.
এলোভেরা শাপলা বা পদ্ম পরিবারের একটি উদ্ভিদ। পেঁয়াজ ও রসুন এই একই পরিবারের উদ্ভিদ। এলোভেরা চাষে গাছের সঠিক নিয়মে বাগানের যত্ন নিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে টবে যেন আগাছা না জন্মে। আগাছা জন্মালে নিড়ানি দিয়ে উপড়ে ফেলতে হবে। গাছে নিয়মিত পানি দিতে হবে। এলোভেরা গাছে বাড়িতে তৈরি করা জৈব সার দিতে পারেন। এর চাষে রাসায়নিক সার ব্যবহার না করাই ভালো। এলোভেরা চাষে চারা লাগানোর অল্প সময়ের ভিতরে ফলন পাওয়া গেলেও এর ভেষজগুন পেতে ৮ মাস অপেক্ষা করতে হয়। এক বছরে এর থেকে ৪ বার পাতা সংগ্রহ করা যায়।
.
এলোভেরার রোগবালাই ব্যবস্থাপনা
.
এলোভেরার একটি প্রধান রোগ হচ্ছে পাতায় দাগ পড়া। এটা সাধারনত ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগ। এই রোগ শীতকালে দেখা না গেলেও ফাল্গুন মাসে বেশি পরিলক্ষিত হয়। এতে পাতার ব্যপক ক্ষতি হয়। পাতার চেহারা নষ্ট হয়ে যাহ। এই রোগের আক্রমনে পাতার অগ্রভাগে আলপিনের মাথার মতন ক্ষুরদ দাগ পড়ে। সেখান থেকে আঠার মতো কষ বের হয়। ওই আঠা শুকিয়ে বাদামি দাগের সৃষ্টি করে। এভাবে আক্রান্ত গাছের পাতায় ধীরে ধীরে দাগ বড় হতে থাকে ও দাগের সংখ্যাও বাড়তে থাকে। ছত্রাকনাশক প্রয়োগে তেমন ফল পাওয়া যায় না। ১৫ দিন পরপর চুন পানিতে গুলে স্প্রে করে এর থেকে পরিত্রান পাওয়া যেতে পারে।
.
এছাড়াও গাছের গোড়া পচা রোগের কারনেও গাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়ে থাকে। গাছের গোড়ায় পানি জমে থাকলেও বা ভেজা থাকলে গোড়া পচা রোগ হয়। ছত্রাকনাশক স্প্রে করে এই রোগের থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *