কবুতরে পক্স

কবুতরের পক্স বা গুটি বসন্ত

কবুতরের সবচেয়ে কমন একটি রোগের মধ্যে পক্স বা গুটি বসন্ত। বর্তমানে বাংলাদেশে এর বিস্তার অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। এ রোগের কারণে খামারের ব্যপক ক্ষতি হয়ে থাকে। শীতকালে এর প্রকোপ বেশি হলেও প্রায় সারাবছর এ রোগ হতে পারে। তবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে এটি থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। এর জন্য এ লেখাটি আপনাকে সাহায্য করবে…

লক্ষণ

কবুতরে ফর বা পালক নেই এমন জায়গাগুলোয় যেমন পা, ঠোট, চোখ ও পায়ুপথের আশেপাশে প্রথমে গুটি গুটি হয়। প্রথমে সাদা মনে হয় পরে হলদে হয়ে বড় হয় ও আশেপাশে আরো বাড়তে থাকে। তবে শ্বাসনালীতে হলে প্রথমে তেমন বুঝা যায় না। তবে কবুতরকে হা করিয়ে দেখলে একধম ভিতরে ছোট ছোট গুটি দেখা যায়। তখন কবুতর খাবার খেতে পারে না।

কেন হয়

পক্স বা গুটি বসন্ত একটি মশাবাহিত রোগ। যখন মশার প্রকোপ বেশি হয় তখন এ রোগের প্রকোপ বেশি হয়। এছাড়া খামার অপরিষ্কার থাকলে বিভিন্ন পোকার উপদ্রব হয়, তখন এটি আরো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। একবার হয়ে গেলে এটি খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

প্রতিরোধ ব্যবস্থা

কবুতরের বাসা সবসময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। সবচেয়ে বেশি যা করতে হবে তা হল কবুতরকে যে কোন ভাবে মশার কামড় থেকে বাঁচানো। না হলে এ রোগ থেকে আপনার কবুতরকে রক্ষা করতে পারবেন না। সে জন্য কবুতরের খাঁচার চারদিকে ভাল করে মসারি দিয়ে দিতে পারেন বা নিয়মিত মশার কয়েল ব্যবহার করতে পারেন। তবে মসারি দিতে পারলে সবচেয়ে ভাল ফলাফল পাওয়া যায়। আর আক্রান্ত কবুতরকে দ্রুত আলাদা করে নিতে হবে না হলে দ্রুত অন্য কবুতরে ছড়িয়ে যেতে পারে।

চিকিৎসা

কবুতরের শরীরে পক্সের লক্ষণ দেখার সাথে সাথে প্রথমে কবুতরটিকে আলাদা করে নিতে হবে। এর পর কোন কোন স্থানে গুটি হয়েছে তা নির্বাচন করে সে সব স্থানে দিনে তিনবার করে এন্টিসেপ্টিক লাগাতে হবে। যেমন পোবিসেপ মলম বা পটাশ লাগাতে পারেন। পাশাপাশি রিবোসন 5mg প্রতিদিন সাকালে ও বিকালে একটি করে খাওয়ান। এভাবে ৫-৬ দিন পরে গুটি গুলো শুকিয়ে গেলে নখ দিয়ে ধরে গুটি গুলো তুলে ফেলতে হবে, একটু রক্ত পরতে পারে তবে এগুলো পরিষ্কার করে পোবিসেপ, পটাশ বা হলুদ লাগিয়ে দিবেন। এভাবে করলে আপনার কবুতর ৬-১০ দিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠবে।

তবে যদি পক্স কবুতরের শ্বাসনালীতে হয় তবে প্রায় ৯৫% ক্ষেত্রেই কবুতরেক বাঁচানো সম্ভব হয় না। এর জন্য আপনি রিবোসন এর সাথে সিপ্রোসিন+প্লাজিল চার ভাগের একভাগ করে দিনে ২ বার করে দিন। তবে অবশ্যই একদম পেটে ডুকিয়ে দিতে হবে না হলে বমি করে দিতে পারে। একি রকম করে দিনে ২-৩ বার খাবার খাইয়ে দিতে হবে। কারণ শ্বাসনালীতে পক্স হলে খাবার খেতে পারে না।

krishibangla.net

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *